আমেরিকাতে ছোট বেলায় খবরের কাগজ ডেলিভারি করে যা আয় হতো তা দিয়ে সব খরচ চলতো না। একদিকে আমার বাবা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আরেকদিকে আমি পেপারবয়। দুইজনই আমাদের শখের জিনিস (ফটোগ্রাফি) দিয়ে কিভাবে অতিরিক্ত উপার্জন করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করতে থাকি। বাসাতে স্টুডিও এবং বেজমেন্ট এ ল্যাব। C-41নেগেটিভ থেকে প্রিন্ট এবং E-6 স্লাইডস ম্যানুয়ালি হাতে করতাম। মাঝেমধ্যে দুয়েকটা বিয়ে এবং ফ্যামিলি পোট্রেইট ছবি তোলা যথেষ্ট ভাল ব্যবসা না।

আমি Valley High school, Smithers, West Virginia, USA তে পড়া অবস্থায় স্কুল গ্র্যাজুয়েশন এর সময় সবার ছবি তুললাম এবং প্রিন্সিপ্যাল এর কাছ থেকে সবার নাম,ঠিকানা এমনকি দাদা-দাদী ও নানা-নানীদেরও যোগাযোগের ঠিকানা নিয়ে নিলাম। ফ্রি স্যাম্পল পাঠানোর জন্য সবাই মত দিয়েছিল। আমি সবার কাছে স্যাম্পল পাঠানো শুরু করি। একটা ফর্ম ফিলাপ করাতে হয়েছে স্যাম্পল এর সঙ্গে এবং বিভিন্ন সাইজের প্যাকেজ ছিল অল্প দাম থেকে পুরা প্যাকেজ শুধু ছাত্র-ছাত্রীদের না, তাদের দাদা-দাদী, নানা-নানীদেরও পাঠাই। ৪-৫ দিন পরে দুই একটা করে অর্ডার আসা শুরু করে। তারপর ডজনস, তারপর এমন অর্ডার আসা শুরু করলো আমরা বাপ-বেটা গভীর রাত পর্যন্ত, নিয়মিত ফ্রি সময় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করে শেষ করতে পারতেছিলাম না। আমরা ম্যানুয়াল থেকে সেমি অটোমেটিক প্রসেসর কিনলাম দ্রুত প্রিন্টের জন্য। এরপর বিভিন্ন স্কুল এবং ইউনিভার্সিটিতে বাপ-বেটা ফটো তোলা এবং একিভাবে প্রসেস করি। ফটোগ্রাফি যদিও শখের জিনিস ছিল বাপ-বেটার মধ্যে। কিন্তু একটু সৃজনশীলতাই টাকা উপার্জনের রাস্তা হয়ে যায় ।

ফটোগ্রাফি আমাদের ভবিষ্যত ব্যবসা এবং ফাউন্ডেশন গড়তে সাহায্য করে। তাইতো আমার বাবা প্রায় ৫০ বছর বয়সেও ইমেজ ম্যানিপুলেশন ব্যবসা শুরু করতে সাহস পেয়েছিলেন। আমার পেপারবয়, ফটোগ্রাফি, খবরের কাগজ আর ফটোগ্রাফার ইত্যাদি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছিল। যা রাস্তা দেখিয়েছিল এবং ধাপে ধাপে আরো আসছে পরে কি করলাম তা নিয়ে ।

2018-06-22T23:24:28+06:00