‘৮০র দশকে ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রিপ্রেস এবং ডিজিটাল ইমেজ ম্যানিপুলেশন কোম্পানি এপ্লাইড গ্রাফিক্স টেকনোলোজিসে কাজ করছিলাম। কিছুদিন কাজ করার পরই ভাবলাম ডিজিটাল টেকনোলোজি ট্রান্সফার করতে হবে বাংলাদেশে যাতে প্রচুর মানুষের কর্ম সংস্থান হবে। Apple হাঁটি হাঁটি পা করে গ্রাফিক্সে ঢুকছে তখন, ডিটিপি Apple এর জন্য এডভান্সড কোন প্রযুক্তি ছিলোনা। তখন আমরা Scitex টেকনোলোজি ব্যবহার করতাম ডিজিটাল ইমেজ ম্যানিপুলেশন এবং প্রিপ্রেস কাজের জন্য। Scitex তখন সর্বাধুনিক টেকনোলোজি ব্যবহার করতো। আমরা তখন ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করে ইমেজ ম্যানিপুলেশন, পেজ এসেম্বল করে ফিল্মগুলি পেজফ্যাক্সের মাধ্যমে ক্রসফিল্ডের স্যাটেলাইটের মাধ্যমে একসাথে প্রচুর প্রিন্টিং কোম্পানিতে পেজগুলি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাঠাতাম একই সঙ্গে। সেই সময় এটা ছিল সবচেয়ে লেটেস্ট টেকনোলোজি এবং ভলিউমের পরিমাণ এত বেশী ছিল যে ২-১টা প্রিন্টিং কোম্পানির সাধ্যের মধ্যে ছিলোনা প্রিন্ট করার। কোম্পানিগুলোর মধ্যে Newsweek, Time, National Geographic, Smithsonian, VanityFair, US News and World Report, The National Journal, National Review, The New Republic ইত্যাদি অন্যতম। আমরা আমেরিকার বাইরেও ফিল্ম পাঠাতাম স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যা সরাসরি প্রিন্টিং কোম্পানিতে প্লেট বার্ন করতো এবং প্রিন্টিং করতো। আমরা স্ক্যানিং থেকে ইমেজ ম্যানিপুলেশন থেকে পেজ এসেম্বল করে ফাইনাল ফিল্ম করা পর্যন্ত পুরা স্টেপস ডিজিটালি করতাম।

আমার বাবার এক্সপার্টাইজ কালার সেপারেশনে এবং আমার ডিজিটাল টেকনোলোজির অভিজ্ঞতা একসাথে করে কিভাবে বাংলাদেশে টেকনোলোজি ট্রান্সফার করা যায় এবং কিভাবে অনেক লোক নিয়োগ দেয়া যায় এ কাজে সেটা নিয়ে অনেকদিন ধরে আমরা প্ল্যানিং করি কিন্তু বাংলাদেশে যাওয়ার আগে আমার বাবা “কালার সেন্টার” নামে কালার সেপারেশন কোম্পানি শুরু করেন আমেরিকার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াতে যেখানে মূলত কালার সেপারেশনের কাজকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। আমি বেঙ্গল গ্রাফিক নাম দিয়ে আমেরিকার ভার্জিনিয়াতে ডিজিটাল টেকনোলোজি বেসড কোম্পানি শুরু করি বাবার কালার সেন্টারের অনেক আগে।

ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার কালার সেন্টার থেকে কালার সেপারেশন নিয়ে এসে বেঙ্গল গ্রাফিকস (ভার্জিনিয়া, আমেরিকা) ডিজিটালি ইমেজ ম্যানিপুলেশন করে গ্রাহকদের দেয়া শুরু করি। বড় বড় গ্রাহকের কাজ আসা শুরু করে মান এবং সার্ভিস দেখে। বেঙ্গল গ্রাফিক্স এর গ্রাহকদের মধ্যে RR Donnelley the biggest printing company in the world, Nation’s Business Magazine the most circulated Business Magazine in the world for US Chamber of Commerce, Washingtonian Magazine, Rolls Royce ইত্যাদি অন্যতম । ৩ বছরের মধ্যে আমাদের কোম্পানি আমেরিকার ১৭তম বৃহৎ ইমেজ ম্যানিপুলেশন এবং প্রিপ্রেস কোম্পানিতে পরিণত হয়। আমাদের কোম্পানি অনেক প্রিন্টিং এবং পাবলিশিং সম্পর্কিত ম্যাগাজিনে ফিচার হয়। যতভাবে আমার ডিজিটাল এবং বাবার হাই এন্ড কালার সেপারেশন এক্সপার্টাইজ এর মাধ্যমে বাংলাদেশে কিছু লোকের চাকরি হবে এই আশায় আমা বাবা এবং আমি ঢাকায় কালার সেন্টার শুরু করি। যেখানে উপমহাদেশে প্রথম হাই এন্ড ডিজিটাল স্টুডিও শুরু করি যার ফটোগ্রাফি, ডিজিটাল স্টুডিও তারপর সেলস এবং মার্কেটিং আমার দায়িত্ব ছিল। বাবার দায়িত্বে ছিল ডিটিপি এবং হাই এন্ড কালার সেপারেশন। আমরা অল্প দিনের মধ্যে বাংলাদেশে নাম্বার ওয়ান হই। তারপর যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কালার সেন্টার থেকে সফলভাবে কালার এক্সপার্টস ইন্টারন্যাশনালে পরিবর্তন করি নাম । কারণ কালার সেপারেশন এবং ডিটিপি থেকে আমরা ডিজিটাল ইমেজ ম্যানিপুলেশনে কাস্টোমারের চাহিদা অনুযায়ী ব্যবসা শুরু করি এবং এখানে এখন তিন শতাধিক মানুষ কাজ করছে । আমার এবং আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রিপ্রেস এবং ইমেজ ম্যানিপুলেশন কোম্পানিতে কাজ করে যে ডিজিটাল টেকনোলোজি আমি ১৯৮৫ এ শুরু করেছিলাম ইদানিং কেউ কেউ ভাবছে ডিজিটাল টেকনোলোজি নিয়ে কিন্তু এটা খুব পাওয়ারফুল এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব।যেটা বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে খুব বেশী প্রয়োজন।

ডিজিটাল টেকনোলোজির মত বা আরো শক্তিশালী কোন কিছু কাজের সুযোগ করে দিবে । জুটের সলিউশনের ক্ষেত্রেও ডিজিটাল টেকনোলোজিকে এর চেয়েও বেশী ব্যবহার করা সম্ভব। এখনই এই জুট সলিউশন রিসোর্সের ম্যাক্সিমাম ব্যবহার করতে হবে।

ডঃ মুবারক আহমদ খান জুটের সলিউশনের আবিষ্কারক। উনার সাথে প্রথম থেকেই জুট পলিব্যাগ নিয়ে রেগুলার কমিউনিকেশন করা হচ্ছে ইমেইল, ফোন এবং হোয়াটসএপের মাধ্যমে। এক্সেস প্রিন্টিং সলিউশনস আরব আমিরাতে এবং আশেপাশের দেশগুলোতে আমাদের কালি বিক্রি করে এবং ঐ কালি ব্যবহারের জন্য মাসে আমাদের কাস্টোমার প্রিন্টিং কোম্পানিতে ২০,০০০ টন পলিথিন ইউজ করা হচ্ছে শুধু আমাদের কালির জন্য। এই প্রোডাক্টের গ্লোবালি চাহিদা প্রচুর। আশাকরি বাংলাদেশের চাহিদা মিটিয়ে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ জুট থেকে তৈরী পলিথিন গ্লোবালি বিক্রি করতে পারবে এবং আমরা ২০,০০০ টন ধীরে ধীরে রিপ্লেস করতে পারবো বাংলাদেশের এই পণ্য ব্যবহার করে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যদি আরো জুট পলিব্যাগ ডেলিভারি দিতে পারে দেশের চাহিদা মিটিয়ে তার জন্য আমরা অপেক্ষা করবো। জুট সলিউশনের মাধ্যমে জুটের প্রোডাক্ট আর জুট থেকে তৈরী পলিথিন সহ মানসম্পন্ন বাংলাদেশী প্রোডাক্ট গ্লোবালি মার্কেটিং করতে সাহায্য করবো। সত্যিকার আগ্রহী যারা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করতে চায় তাদেরকে আমরা বিজনেস ডেভেলপমেন্ট, মার্কেটিং এবং কন্সালটেন্ট হিসেবে সাহায্য করবো জুট সলিউশন এর মাধ্যমে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হবে অনেক চাষীর যাতে কাজ করার সুযোগ হয় এবং সেই সাথে তাদের পরিবারের জীবনযাত্রার মান যাতে উন্নত হয়।

2018-06-22T23:23:57+06:00